তিন কুল পড়ার ফজিলত ও আমলের পদ্ধতি
* সুরা ইখলাস -
উচ্চারণ : কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুচ্চামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।’ (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেয়া জরুরি )
অর্থ : (হে রাসুল! আপনি) বলুন, তিনিই আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।’ (সুরা ইখলাস)
* সুরা ফালাক্ব -
উচ্চারণ : কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক্ব; মিন শাররি মা খালাক্ব; ওয়া মিন শাররি গাসিক্বিন ইজা ওয়াক্বাব; ওয়া মিন শাররিন নাফ্ফাছাতি ফিল উক্বাদ; ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইজা হাসাদ। (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেয়া জরুরি )
অর্থ : বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে। অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।
* সুরা নাস-
উচ্চারণ : কুল আউজু বিরাব্বিন নাস; মালিকিন্ নাস; ইলাহিন্ নাস। মিন্ শররিল ওয়াস্ওয়াসিল খান্নাস; আল্লাজি ইউওয়াসয়িসু ফি ছুদুরিন নাস। মিনাল ঝিন্নাতি ওয়ান নাস। (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেয়া জরুরি )
অর্থ : বলুন, আমি আশ্রয় চাই মানুষের পালনকর্তার কাছে, মানুষের অধিপতির কাছে, মানুষের মাবুদের কাছে। তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।
সুরা ৩টির বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা:-
- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়তেন এবং উভয় হাতে ফুঁক দিতেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন।’ (বুখারি)
- হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, শয়তানের অনিষ্ট ও জাদুটোনা থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যায় এ ৩ সুরার আমল খুবই কার্যকরী। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস ও এই দুই সুরা ( সুরা ফালাক ও সুরা নাস) পড়বে সে সব বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (তিরমিজি)
- ফজর আর মাগরিবের এই দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস প্রতিটি তিনবার করে পড়া সুন্নত। অন্যান্য ফরজ সালাতের আদায় করে একবার করে এই তিন সুরা পড়ার কথা বলা হয়েছে।’ (আবু দাউদ)
- হজরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমার কি জানা নেই আজ রাতে আমার ওপর যে আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে এগুলোর মতো কোনো আয়াত দেখাও যায়নি এবং শোনাও যায়নি। আর তাহলো- কুল আউজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আউজু বি রাব্বিন নাস।’ (মুসলিম)
- একবার এক ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের ওপর জাদু করেছিল। যার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে জিবরিল আলাইহিস সালাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন যে, এক ইয়াহুদি তাকে জাদু করেছে এবং যে জিনিস দিয়ে জাদু করা হয়েছে তা একটি কুপের মধ্যে পাথরের নিচে আছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই জিনিস কূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য লোক পাঠালেন। সেখানে গিয়ে কয়েকটি গিরা পাওয়া গিয়েছিল। তখন তিনি সুরা নাস ও ফালাক্ব একসঙ্গে পড়ে ফুক দেন আর গিরাগুলো সঙ্গে সঙ্গে খুলে যায় এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে বিছানা থেকে ওঠেন।’
- হজরত ওকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সুরার কথা বলছি, যা তাওরাত, ইঞ্জিল, জবুর এবং কুরআনে অবতীর্ণ হযেছে। রাতে তোমরা ততক্ষণ ঘুমাতে যেয়ো না, যতক্ষণ সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। ওকবা বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এ আমল পরিত্যাগ করিনি।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়।’ (ইবনে কাসির)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কুরআনুল কারিমের সর্বশেষ তিনটি ছোট্ট সুরার নিয়মিত আমল করা। সকাল-সন্ধ্যায় (ফজর ও মাগরিবের পর) ৩ বার এবং অন্য তিন ওয়াক্তে ১বার করে নিয়মিত তেলাওয়াত করা। আর এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে দান করবেন-
- জান্নাত।
- আল্লাহর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি।
- গোনাহ থেকে মুক্তি।
- দারিদ্র থেকে মুক্তি।
- বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি।
- জাদুটোনা থেকে মুক্তি।
- শয়তানের আক্রমণ থেকে মুক্তি।
- যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে মুক্তি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস-এর তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও উপকারিতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
তিন কুল পড়ার ফজিলত ও আমলের পদ্ধতি:-
শুরুতে আমরা ঐ সকল হাদীস উল্লেখ করব, যেগুলোতে তিন কুল পড়ার ফজিলত একত্রে বর্ণিত হয়েছে। এরপর ঐ সকল হাদীস উল্লেখ করব, যেগুলোতে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাসের ফজিলত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বর্ণিত হয়েছে।
দুইটি পরিভাষা
المعوذتان (মু’আওয়িযাতান): শব্দটি হাদীসে সুরা ফালাক ও সুরা নাসকে একত্রে বুঝানোর জন্য ব্যবহার হয়েছে।
المعوذات (মু’আওয়িযাত): শব্দটি হাদীসে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস, এই তিন সুরাকে একত্রে বুঝানোর জন্য ব্যবহার হয়েছে। আমরা অনুবাদের সময় এই শব্দের অর্থ তিন কুল লেখেছি।
১. সকাল-সন্ধ্যায় তিন কুল পড়লে সকল ক্ষতিকর বস্তু থেকে নিরাপত্তা লাভ হয়
আবদুল্লাহ ইবনে খুবাইব রা. বলেন-
خرجنا في ليلة مطيره وظلمة شديدة، نطلب النبيّ صلى الله عليه وسلم ليصلي لنا، فأدركناه فقال: قُلْ، فلم أقل شيئاً، ثم قال: قُلْ، فلم أقل شيئاً، قال: قُلْ، فقلت: ما أقولُ؟ قال: قُلْ هُوَ اللَّهُ أحَدٌ وَالمُعَوِّذَتَيْنِ، حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاثَ مَرَّاتٍ، تَكْفِيكَ مِنْ كُلّ شئ
আমরা এক বৃষ্টির রাতে প্রচন্ড অন্ধকারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খোঁজে বের হলাম, যাতে তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। আমরা তাকে খুঁজে পেলাম। তিনি বললেন, বলো। আমি কিছু বললাম না। তিনি আবার বললেন, বলো। আমি কিছু বললাম না। তিনি আবারো বললেন, বলো। আমি বললাম, কী বলব? তিনি বললেন, তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে তিনবার করে পড়বে- قُلْ هُوَ اللَّهُ أحَدٌ (সুরা ইখলাস) এবং মুয়াওয়িযাতাইন (অর্থাৎ সুরা ফালাক ও সুরা নাস)। তাহলে এটি সব (ক্ষতিকর) বস্তু থেকে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।
–জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৮২
২. প্রত্যেক ফরয নামাযের পর তিন কুল পড়া
উকবা ইবনে আমের রা. বলেন-
أمرني رسول الله صلى الله عليه وسلم أن أقرأ بالمعوذات دبر كل صلاة
আমাকে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক (ফরয) নামাযের পর তিন কুল পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫২৩
৩. রাতে ঘুমানোর আগে তিন কুল পড়ে শরীরে হাত বুলানো
আয়েশা রা. বলেন-
أن النبي صلى الله عليه وسلم كان إذا أتى إلى فراشه في كل ليلة جمع كفّيه، ثم نفث فيهما، وقرأ فيهما: قُلْ هُوَ الله أحد، وقل أعوذ برب الفلق، وقل أعُوذُ بِرَبّ الناس، ثُم مسح بهما ما استطاع من جسده، يبدأ بهما على رأسه ووجهه، وما أقبل من جسده، يفعل ذلك ثلاثَ مرّاتٍ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিরাতে যখন বিছানায় যেতেন, দুই হাত মেলাতেন (মুনাজাতের সময় হাত তোলার মতো করে)। এরপর হাতের উপর قُلْ هُوَ الله أحد (সুরা ইখলাস), قل أعوذ برب الفلق (সুরা ফালাক) ও قل أعُوذُ بِرَبّ الناس (সুরা নাস) পাঠ করতেন। এরপর হাতে ফুঁ দিতেন। এরপর দুই হাত দিয়ে শরীরের যতটুকু অংশে সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। শুরু করতেন মাথা, চেহারা এবং শরীরের অগ্রভাগ থেকে। এভাবে (পুর্ণ কাজটি) তিনি তিনবার করতেন।
–মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪৮৫৩; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৭
৪. অসুখ হলে তিন কুল পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে হাত বুলানো
আয়েশা রা. বলেন-
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا اشتكى نفث على نفسه بالمعوذات، ومسح عنه بيده، فلما اشتكى وجعه الذي توفي فيه، طفقت أنفث على نفسه بالمعوذات التي كان ينفث، وأمسح بيد النبي صلى الله عليه وسلم عنه
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অসুস্থ হতেন, তখন তিন কুল পড়ে (হাতে) ফুঁ দিতেন এবং (নিজের শরীরে) হাত বুলাতেন। যখন তিনি অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমি তিন কুল পড়ে ফুঁ দিতাম এবং তার হাতে হাত বুলাতাম।
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৬, ৫৭৩৫, ৫৭৫১
সুরা ইখলাসের ফজিলত : সুরা ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশ
আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন-
قال النبي صلى الله عليه وسلم لأصحابه: أيعجز أحدكم أن يقرأ ثلث القرآن في ليلة؟ فشق ذلك عليهم وقالوا: أينا يطيق ذلك يا رسول الله؟ فقال: الله الواحد الصمد ثلث القرآن
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের বললেন, তোমাদের কেউ কি এমন আছে যে একরাতে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পড়তে পারবে? এটা সাহাবীদের কাছে অনেক কঠিন মনে হল। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এটা কার পক্ষে সম্ভব? তখন তিনি বললেন, সুরা ইখলাস হল কুরআনের এক তৃতীয়াংশ।
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৫
অন্য একটি হাদীসে এসেছে-
আল্লাহর নবীর যামানায় এক ব্যক্তি শেষরাতে বারবার শুধু সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করছিল। অন্য কিছু পড়ছিল না। অপর ব্যক্তি ঘটনাটি দেখে এটাকে (শুধু সুরা ইখলাস পড়াকে) কম (আমল) মনে করল, এবং সকালে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করল। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঐ সত্ত্বার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, নিশ্চয় সুরা ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।
হাদীসের আরবী পাঠ এই-
عن أبي سعيد الخدري أن رجلا سمع رجلا يقرأ: قل هو الله أحد يرددها، فلما أصبح جاء إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فذكر ذلك له، وكأن الرجل يتقالها، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: والذي نفسي بيده إنها لتعدل ثلث القرآن
عن أبي سعيد الخدري، أخبرني أخي قتادة بن النعمان: أن رجلا قام في زمن النبي صلى الله عليه وسلم يقرأ من السحر: قل هو الله أحد لا يزيد عليها، فلما أصبحنا أتى الرجل النبي صلى الله عليه وسلم نحوه
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৩, ৫০১৪
সুরা ইখলাস আল্লাহর ভালোবাসা লাভের উপায়
আয়েশা রা. বলেন-
أن النبي صلى الله عليه وسلم بعث رجلا على سرية، وكان يقرأ لأصحابه في صلاتهم فيختم بقل هو الله أحد، فلما رجعوا ذكروا ذلك للنبي صلى الله عليه وسلم، فقال: سلوه لأي شيء يصنع ذلك؟ فسألوه، فقال: لأنها صفة الرحمن، وأنا أحب أن أقرأ بها، فقال النبي صلى الله عليه وسلم: أخبروه أن الله يحبه
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। ঐ ব্যক্তি তার সঙ্গীদের নিয়ে নামাযে সুরা ইখলাস দিয়ে কেরাত শেষ করত। যখন তারা ফিরে আসল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করল। নবীজী বললেন, তাকে জিজ্ঞেস কর, কেন সে এমনটি করে? তারা তাকে জিজ্ঞেস করল। সে বলল, কারণ এই সুরাটি হচ্ছে রহমানের গুণ (অর্থাৎ, এতে আল্লাহর গুণাবলী আলোচনা করা হয়েছে), আর আমি এই সুরা পড়তে ভালোবাসি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে বল যে আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন।
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৩৭৫
সুরা ফালাক ও সুরা নাসের ফজিলত
উকবা ইবনে আমের রা. বলেন-
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ألم تر آيات أنزلت الليلة لم ير مثلهن قط قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জানো? আজ রাতে এমন কিছু আয়াত নাযিল হয়েছে, যার মতো আয়াত আগে কখনো দেখা যায়নি। এরপর তিনি সুরা ফালাক ও সুরা নাসের কথা উল্লেখ করেছেন।
সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮১৪
সুরা ফালাক ও সুরা নাস জ্বীন থেকে ও মানুষের বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া
আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন-
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يتعوذ من الجان وعين الإنسان حتى نزلت المعوذتان فلما نزلتا أخذ بهما وترك ما سواهما
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বিভিন্ন ভাবে) জ্বীন থেকে ও মানুষের বদ নজর থেকে (আল্লাহর কাছে) পানাহ চাইতেন। যখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাযিল হল, তখন তিনি এই দুই সুরা আঁকড়ে ধরলেন আর অন্যসব ছেড়ে দিলেন।
-জামে তিরমিযী, হাদীস ২০৫৮
Comments
Post a Comment